নিজের মেয়ের লাশ ভেবে দাফন করার পর জীবিত ফিরে এসেছেন শরীয়তপুরের সখিপুর তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তাবাচ্ছুম।
গতকাল সোমবার (২জুলাই) সকালে তাবাচ্ছুম ও তার প্রেমিক আজিজ এলাকায় ফিরে আসলে এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।চরসেন্সাস ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হলে এলাকার শত শত সাধারণ মানুষ তাদের দেখতে ভিড় জমায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর তারাবনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী তাবচ্ছুম (১৫) একই বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আব্দুল আজিজ মৃধার (২২) সাথে দীর্ঘদিনের প্রেমের সর্ম্পক চলছিল। উভয় পরিবার তাদের সর্ম্পক মেনে না নেয়ায় গত ২১ জুন তাবচ্ছুম ও আব্দুল আজিজ মৃধা প্রেমের টানে ঘর ছাড়ে। ২৪ তারিখ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা এলাকায় সুটকেসবন্দি অজ্ঞাত পরিচয়ের এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফেসবুকের মাধ্যমে সেই খবর পেয়ে আশুলিশয়া থানায় ছুটে যান তাবাচ্ছুমের মামা, চাচাসহ কয়েক জন স্বজন। অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশটিকে তাবাচ্ছুমের লাশ হিসেবে চিহ্নিত করেন তার স্বজনরা। এরপর সেই লাশ এনে তাবাচ্ছুমের বাবার বাড়ি সখিপুরে দাফন করা হয়।
এদিকে তাবাচ্ছুম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুসে উঠে এলাকাবাসী। তারাবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটি ও এলাকাবাসী বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ মৃধা পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপন করে।
এরই মধ্যে তাবাচ্ছুমের মৃত্যূর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে তাবাচ্ছুম ও আজিজ মৃধা স্থানীয় চরসেন্সাস ইউনিয়ন পরিষদে এসে উপস্থিত হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ তাদের দেখতে ইউনিয়ন পরিষদে ভিড় জমিয়েছে।
তাবাচ্ছুম বলেন, আমি নিজে বাড়ি হতে পালিয়ে বান্দরবন চলে যাই। আর তার চাচা চাচি দাদি মা মেয়েকে হারিয়ে পাগলের মত হয়ে যায়। একই রকম চেহেরা হওয়া আশুলিয়া হতে নাম না জানা মেয়েটির লাশটি দাফন করেন।
তাবাচ্ছুমের মা নিলুফা বেগম বলেন, আমার ছোট নাবালিকা মেয়েকে ১ লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে ছেলে আব্দুল আজিজ পালিয়ে যায়। পরে জানতে পারলাম যে আমার মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে ঢাকাতে। সেখান থেকে অনেক ফুলা মুখ চেনা যায় না এমন অবস্থায়। আমার মেয়ে ভেবে দাফন করি। আর তাদের বিরুদ্ধে সখিপুর থানায় অপহরণ মামলা করি।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মাঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, শুনেছি তাবাচ্ছুম এলাকায় এসেছে। তাহলে তার স্বজনরা কার লাশ এনে দাফন করলো এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

News Page Below Ad