জাতীয়
Hits: 728
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যেসব নেতা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অনুরোধ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী পোস্টারে দলীয় প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারের বিষয়েও ইসির কাছে আপত্তি জানিয়েছে দলটি। এ ছাড়া সারা দেশে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ওপর ব্যাপক আক্রমণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
গতকাল শুক্রবার রাতে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম এসব অভিযোগ ও অনুরোধের কথা জানান।
এর আগে বিকেল সোয়া ৬টা থেকে সোয়া ৮টা পর্যন্ত ইসির সঙ্গে বৈঠক করে এইচ টি ইমামের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামায়াতের প্রার্থীরা বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের ওয়েবসাইটে সেই প্রার্থীদের নাম, পদসহ উল্লেখ করা আছে। কাজেই তারা অসত্য তথ্য দিয়েছে। তাই তারা প্রার্থী হিসেবে থাকতে পারে না। আদালতও নির্বাচন কমিশনের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জামায়াতের যেসব সদস্য ধানের শীষে প্রার্থী হয়েছে, তাদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়েছি।’
লাঠির ওপর ধানের শীষ নিয়ে প্রচারকাজের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এইচ টি ইমাম বলেন, ‘এতে যেকোনো ধরনের সংঘাতের ঘটনা ঘটতে পারে। শুধু বিএনপি নয়, যেকোনো দলেরই নির্বাচনী প্রচারে লাঠি বা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন বস্তুর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।’
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বারবার কমিশনের সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করায় আওয়ামী লীগের কমিশনের প্রতি আস্থাহীনতা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আস্থাহীনতা আছে বলে মনে করি না। নির্বাচন কমিশন আদালতের মতো। সেখানে বিচারকরা যেমন নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারে, এখানে কমিশনাররাও নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতই গ্রহণযোগ্য হবে।’
বিএনপির নির্বাচনী পোস্টার দৃশ্যমান না হওয়ার বিষয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কাছেও গুঞ্জন আছে, বিষয়টি রহস্যজনক।’
আ. লীগের প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে : এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের আরো বলেন, ‘সারা দেশে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ওপর ব্যাপক আক্রমণ হচ্ছে। কোথাও সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে। সব কিছু আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। আমরা কাউকে আক্রমণ করি না। বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা উল্টো এসে ইসিতে অভিযোগ করছে। হামলা আওয়ামী লীগের ওপরেই হয়েছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিদের ওপর বেশি হামলা হচ্ছে।’
খালেদা-তারেকের ছবিতে আপত্তি : নির্বাচনী পোস্টারে দলীয় প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারের বিষয়ে ইসির কাছে আপত্তি প্রসঙ্গে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচনী পোস্টার সস্পর্কে বলা হয়েছে সাইজ হবে ১৮/২০, সাদাকালো হবে এবং সেখানে কার ছবি থাকবে তা-ও নির্বাচন আচরণবিধিতে বলা আছে। বলা আছে, দলের যিনি বর্তমান সভাপতি তাঁর ছবি ব্যবহার করা যাবে। আমাদের দলের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর ছবি এবং প্রার্থীর ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ছবিও আমাদের প্রার্থীরা ব্যবহার করছেন না। অন্যদিকে বিএনপির পোস্টারে প্রচার-প্রচারণায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনের ছবিই ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি তো আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির বর্তমান সভাপতি কে? খালেদা জিয়া তো নন। বর্তমান সভাপতি তাদের মতে তারেক রহমান। তারেক রহমানই যদি হন, তিনি তো দণ্ডিত আসামি। একজন দণ্ডিত আসামির ছবি কিভাবে ব্যবহার হয়? আইনের ভাষায় তিনি পলাতক আসামি। একজন পলাতক আসামির ছবি পোস্টারে ছাপানো সম্ভব কি না এ বিষয়টি কমিশনের কাছে আমরা জানতে চেয়েছি।’