অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থায় বিএনপি, লন্ডন বৈঠক ও ইশরাক ইস্যুতে কৌশলী সিদ্ধান্ত
বিএনপি আপাতত অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থা রেখে রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, অবিশ্বাস তৈরি হতে পারে এমন কোনও কাজে এখন না জড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ।
স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনার মূল বিষয়
সোমবার রাতে দলের ভার্চুয়াল স্থায়ী কমিটির সভায় দুটি বিষয় ঘিরে ব্যাপক আলোচনা হয়:
- ১৩ জুন অনুষ্ঠিত লন্ডন বৈঠক ও পরবর্তী পরিস্থিতি, যেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট হওয়ার সম্ভাবনার কথা উঠে আসে।
- ইশরাক হোসেনের মেয়র হিসেবে শপথ ছাড়াই দায়িত্ব গ্রহণ এবং তাঁর আন্দোলন। ইশরাক আদালতের রায় পাওয়ার পরেও শপথ না নিতে পেরে নিজেই দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন, যা দলের মধ্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দলীয় অবস্থান ও কৌশল
সভায় নেতারা একমত হন, ইশরাকের আন্দোলন থেকে হঠাৎ সরে যাওয়া মানে হবে জনগণের কাছে ভুল বার্তা দেওয়া—যেন বিএনপি সরকারের সঙ্গে কোনও গোপন সমঝোতায় পৌঁছে গেছে। তাই আন্দোলন চলবে, তবে তা বিএনপির সরাসরি কর্মসূচি নয়, বরং ঢাকাবাসীর ‘অভিভাবকশূন্যতা’র প্রতিবাদ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
বিএনপির বার্তা: আইনের রক্ষায় সোচ্চার, সংঘাতে নয়
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ইশরাক হোসেন আদালতের রায় পেয়েছেন, নির্বাচন কমিশনও তা স্বীকৃতি দিয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল রায় অনুযায়ী তাঁকে শপথ পড়ানো।’ তিনি আরও জানান, বিএনপি আইন মেনে চলার পক্ষে, এবং আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পক্ষে অবস্থান নেবে।
সরকারের প্রতি পর্যবেক্ষণ ও অপেক্ষার বার্তা
সভায় নেতারা বলেন, এখন সময় সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের। একজন সদস্য জানান, ‘অবিশ্বাস করে ঠকার চেয়ে বিশ্বাস করে ঠকা ভালো। এখন আমাদের দেখতে হবে সরকার আসলে কী করে।’
সারসংক্ষেপ: কৌশল, আস্থা ও গণআন্দোলনের ভারসাম্য
বিএনপি এখন ধীরে চলার নীতিতে। একদিকে সরকারের ওপর নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ, অন্যদিকে আন্দোলনের গতি বজায় রেখে জনগণের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার থাকা—এই দুই পথেই দল কৌশলীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।