রাশেদ খাঁনের অভিযোগ: ‘মব উৎপাদনের জন্য সরকারই দায়ী’, অন্তর্বর্তী সরকারের বিপ্লবী ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন
ঢাকা, ২৩ জুন ২০২৫: গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন মব হামলা ও ‘মবোক্রেসি’র পেছনে সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, দেশের সাম্প্রতিক ‘মব লাঞ্ছনা’ ও বিচারবহির্ভূত ঘটনা একরকম সরকারি প্রশ্রয়ে ঘটছে।
সোমবার (২৩ জুন) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘মবোক্রেসি’র পেছনে সরকার, প্রশ্ন তুললেন রাশেদ
রাশেদ খাঁন লিখেছেন, “গতকাল মবোক্রেসির মাধ্যমে বিতর্কিত প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লাঞ্ছনার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে মবের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও—প্রশ্ন হচ্ছে, এই মব সৃষ্টি কি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হচ্ছে না?”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি সত্যিই আইন ও ন্যায়ের পক্ষে থাকে, তবে বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন, সচিব, ডিসি-এসপি ও আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় নির্বাচিত স্বতন্ত্র নামধারী এমপি-মন্ত্রীদের কেন এখনো আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না?”
‘ডামি-স্বতন্ত্ররা নিরাপদে, গণমানুষের প্রত্যাশা উপেক্ষিত’
রাশেদ খাঁনের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকার যাদের বিপ্লবী ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে, তারা আজ বিতর্কিত রাজনৈতিক চরিত্রদের প্রতি নরম আচরণ করছে। “সরকারের উপদেষ্টারা সাবের, মান্নানসহ অনেক ‘ডামি এমপি’র জামিন করিয়ে পুনর্বাসন করছে। যাদের টাকার জোর ও আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।”
মাফিয়া ও অর্থনৈতিক গোষ্ঠীও দায়মুক্ত
তার ভাষ্য অনুযায়ী, “যেসব মাফিয়া এবং ধনিক শ্রেণি অবৈধ উপায়ে রাজনৈতিক সাম্রাজ্য গড়েছে, তারাও নিরাপদে রয়েছে। যদি তাদের বিচারের আওতায় না আনা হয়, তাহলে জনগণ মনে করতেই পারে—সরকারই মবের পেছনে রসদ জোগাচ্ছে।”
শেখ পরিবারের কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই: রাশেদ
রাশেদ আরও অভিযোগ করেন, “এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৩ হাজারেরও বেশি প্রভাবশালীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। শেখ পরিবারের কেউ এখনো আইনের মুখোমুখি হয়নি। গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত অনেকেই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাহলে এই গণহত্যার বিচার কীভাবে হবে?”
‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা মানেই মব শাসনের উত্থান’
সবশেষে তিনি মন্তব্য করেন, “যতদিন পর্যন্ত সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ থাকবে, ততদিন সমাজে মবোক্রেসি বন্ধ হবে না। মব উৎপাদনের দায় সরাসরি সরকারের ওপরই বর্তায়। সরকারের দুর্বলতা থেকেই এসব ঘটনার জন্ম হচ্ছে।”
বিশ্লেষণ: রাশেদ খাঁনের বক্তব্যে স্পষ্ট—বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক মহলে হতাশা ও উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। আইনের শাসন ও রাজনৈতিক জবাবদিহির ঘাটতির কারণে মবোক্রেসি-জাতীয় ঘটনাগুলো এক ভয়ানক সামাজিক সংকেত হিসেবে দেখা দিচ্ছে।