ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে দেওয়া বিপুল পরিমাণ ঋণ বিতরণ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যাদের দেশত্যাগে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। ২৪ জুন ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে।
দুদক সূত্র জানায়, এসব ঋণ বিতরণে যেসব কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন, তারা দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন—এমন তথ্য হাতে পেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। আদালত মনে করেন, অভিযুক্তরা দেশ ত্যাগ করলে তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে, তাই নিষেধাজ্ঞা একান্ত প্রয়োজন।
যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা এবং ব্যাংকেরই একাধিক বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিশাল অঙ্কের ঋণ অনুমোদন ও বিতরণে সহায়তা করেছেন, যা ব্যাংকিং আইন ও অর্থনৈতিক নীতিমালার পরিপন্থী।
এই অনিয়মের অভিযোগে দুদক ইতোমধ্যেই অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে। তদন্তকাজ প্রাথমিকভাবে শুরু হলেও, বিষয়টির গভীরতা এবং এর প্রভাব বিশ্লেষণে আরও সময় প্রয়োজন হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এই তদন্ত কার্যক্রমকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, ২৩ জুন দুর্নীতির অভিযোগে করা এক মামলায় আদালত মনিরুল মাওলাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলাগুলোর রায় ও অনুসন্ধানের ফলাফল দেশের ব্যাংকিং খাতের জবাবদিহিতা ও সুশাসনের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এই তদন্তের অগ্রগতি দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও ঋণ খেলাপির হার নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের সুশৃঙ্খল তদন্তই অর্থনৈতিক নীতিমালার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারে।