চিলির ভেরা সি. রুবিন মানমন্দির ৩২০০-মেগাপিক্সেল ক্যামেরায় মহাবিশ্বের ছবি

চিলির ভেরা সি. রুবিন মানমন্দির ৩,২০০-মেগাপিক্সেল ক্যামেরা দিয়ে মহাবিশ্বের উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি তোলার মাধ্যমে মহাকাশ পর্যবেক্ষণে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। কোকিম্বোর পাচন পাহাড়ে অবস্থিত এই ৮.৪ মিটার ব্যাসার্ধের টেলিস্কোপ অত্যাধুনিক ডেটা প্রক্রিয়াকরণ সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত ক্যামেরার মাধ্যমে সৌরজগতের উৎপত্তি এবং পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক গ্রহাণু সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করছে।

ভেরা রুবিন ডেটা প্রকল্পের প্রধান উইলিয়াম ও’মুলেন বলেন, “এই প্রযুক্তি মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন যুগের সূচনা করবে এবং বিশাল পরিমাণ তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এক বিপ্লব ঘটাবে।” মাত্র ১০ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে টেলিস্কোপটি আকাশের একটি ছোট অংশ থেকে ২,১০০-এরও বেশি নতুন গ্রহাণু সনাক্ত করেছে, যেখানে অন্যান্য স্থল ও মহাকাশ ভিত্তিক গবেষণাগার বছরে প্রায় ২০,০০০ গ্রহাণু আবিষ্কার করে।

ও’মুলেন আরও জানান, “এই মানমন্দির থেকে কোটি কোটি ছায়াপথ ও তারার তথ্য একসঙ্গে সংগ্রহ করা সম্ভব হবে, যা আগের কোনো প্রযুক্তিতে সম্ভব ছিল না। এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মহাবিশ্বের গূঢ় রহস্য আবিষ্কারে সহায়তা করবে।”

ভেরা সি. রুবিন নামকরণ এই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রটি বিখ্যাত আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানীর নামে, যিনি ডার্ক ম্যাটার বা অদৃশ্য পদার্থের অস্তিত্বের প্রমাণ আবিষ্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

প্রতি রাতে টেলিস্কোপটি দক্ষিণ আকাশ থেকে প্রায় এক হাজার ছবি তুলে, প্রতি তিন থেকে চার রাতে পুরো দক্ষিণ গোলার্ধের আকাশকে আবৃত করে। আতাকামা মরুভূমির পরিষ্কার এবং অন্ধকার আকাশ এই মানমন্দিরকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে।

জ্যোতির্বিদ ফ্রান্সিসকো ফস্টার বলেন, “প্রতি রাতে যে পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে, তা ৮৩,০০০ মানুষের ইনবক্সের সমান। এককভাবে এসব বিশাল ডেটা বিশ্লেষণ করা অসম্ভব, তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়া অপরিহার্য।”

এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণা আরও দ্রুততর ও বিস্তৃত হবে, যা মানবতাকে মহাবিশ্বের গভীর রহস্য উন্মোচনে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সূত্র: Reuters

Leave a Comment