হেটমায়ারের ৯৭*, শেষ বলে ছক্কায় সিয়াটলের প্রথম জয়

মেজর লিগ ক্রিকেটে হাই ভোল্টেজ এক নাটকীয় ম্যাচে শেমরন হেটমায়ারের অবিশ্বাস্য শেষ বলে ছক্কায় অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিয়েছে সিয়াটল অরকাস। টুর্নামেন্টে একটানা ১০ ম্যাচ হারের পর জয়ের মুখ দেখা দলটির জন্য এটি ছিল এক দমবন্ধ করা ম্যাচ, আর হেটমায়ারের জন্য যেন এক আত্মপ্রমাণের মঞ্চ।

ম্যাচের শেষ বল, দরকার ৬ রান—সামনে অভিজ্ঞ কাইরন পোলার্ড, এমন চাপের মুহূর্তে স্ট্রাইকে ক্যারিবিয়ান হার্ডহিটার হেটমায়ার। পোলার্ডের মিডল স্টাম্পে পড়া বলটিকে হাঁটু গেঁড়ে স্কয়ার লেগ দিয়ে তুলে ছক্কা হাঁকালেন হেটমায়ার, বল মাঠ পেরিয়ে গ্যালারিতে, আর সিয়াটলের ডাগআউটে বাঁধভাঙা উল্লাস।

এই ছক্কাতেই ৩ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয় সিয়াটল অরকাস। মুম্বাই নিউইয়র্কের তোলা ২৩৭ রান টপকে গড়ে ফেলে মেজর লিগ ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। এত দিন পর্যন্ত এই রেকর্ড ছিল ওয়াশিংটন ফ্রিডমের দখলে, যারা টেক্সাস সুপার কিংসের বিপক্ষে তাড়া করেছিল ২২১ রান। মজার বিষয়, মাত্র একদিন আগেই ফিফটি না করেই ২১৪ রান তাড়া করে আরেকটি নজির গড়েছিল সেই ফ্রিডমই।

সিয়াটলের এই জয় শুধু রেকর্ডই নয়, মানসিকভাবে ছিল এক বিশাল ঘুরে দাঁড়ানো। চলতি আসরে টানা ৫ হারের পর প্রথম জয়ের দেখা পেল তারা। ম্যাচের নায়ক হেটমায়ার ছিলেন একেবারে জ্বলে ওঠা মূর্তিতে—৪০ বলে অপরাজিত ৯৭ রান, যার মধ্যে শেষ ২ ওভারে খেলেছেন ৮টি বল, চারটিতে মেরেছেন ছক্কা! হাতে গোনা কয়েক বলেই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছেন একাই।

এই ইনিংস হেটমায়ারের জন্যও ছিল জবাব দেওয়ার জায়গা। আইপিএলে খেলেছেন ১৪টি ম্যাচ, রান মাত্র ২৩৯। পাশে ছিলেন ফর্মে থাকা পুরান, যার ব্যাটে এসেছে ৫২৪ রান। এরপর আয়ারল্যান্ড সিরিজেও রান পাননি, প্রশ্ন উঠেছিল তার সামর্থ্য নিয়েই। সমালোচকদের অনেকেই তাকে ‘ওভাররেটেড’ বলতেও ছাড়েননি। তবে এই ইনিংসে হেটমায়ার যেন বলে দিলেন—তিনি এখনো আছেন, এবং বড় মঞ্চে জ্বলে উঠতে জানেন।

ম্যাচ শেষে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে হেটমায়ার বলেন, “এটা নিঃসন্দেহে আমার অন্যতম সেরা ইনিংস। আমরা তখন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ছিলাম। আগের ম্যাচটা এখনও মনে আছে, ওটাও আমাদের জেতা উচিত ছিল। তাই আজ দলকে জেতাতে পারাটা দারুণ অনুভূতি।”

এই জয় কেবল একটি ম্যাচের হিসাব বদলালো না, হেটমায়ার ও সিয়াটল অরকাস—দুই পক্ষেরই আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনল। হয়তো এখান থেকেই শুরু হবে নতুন পথচলা।

Leave a Comment