জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে শাটডাউন: রাজস্ব আদায় কার্যত বন্ধ, অর্থনীতিতে চাপ
সারা দেশে আজ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শাটডাউন কর্মসূচি, যার ফলে বন্ধ হয়ে গেছে আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের শুল্ক ও কর আদায় কার্যক্রম। অর্থবছরের শেষ প্রান্তে এসে এমন অচলাবস্থা রাজস্ব খাতে চাপ তৈরি করেছে এবং দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
সকাল থেকেই এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে কাজ বন্ধ রয়েছে। ভবনে প্রবেশ বা বের হওয়া কারও পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। চেয়ার-টেবিল ফাঁকা, কর্মহীন ভবন কার্যত অচল। আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ‘রাজস্ব খাতে কার্যকর সংস্কার’ এবং বর্তমান চেয়ারম্যানের অপসারণ—এই দুটি মূল দাবিকে কেন্দ্র করেই তাঁরা রাজপথে নেমেছেন।
‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আওতায় সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআরের কার্যালয়ে জড়ো হন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘মার্চ টু এনবিআর’ শিরোনামে একটি বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হয়। ভবনের মূল ফটকে তালা লাগানো হয়েছে; ফলে ভবনের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এই কর্মসূচির প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল, ঢাকা কাস্টমস হাউসসহ দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশনে। আমদানি-রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় শুল্কায়ন কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। অথচ জুন মাস রাজস্ব আদায়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণের শেষ মুহূর্তে এমন অচলাবস্থা রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি চলবে। রাজস্ব খাতের কাঠামোগত সংস্কার ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থার দাবিতে তাঁরা সব কার্যক্রম স্থগিত রেখেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘস্থায়ী এই অচলাবস্থা সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়ের জন্যই উদ্বেগজনক। রাজস্ব খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।