সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল রীতিমতো কাঁপিয়ে দিল ক্লাব বিশ্বকাপের মঞ্চ। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিকে রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে ৪-৩ গোলে হারিয়ে জায়গা করে নিল কোয়ার্টার ফাইনালে। ম্যাচজুড়ে নাটক, উত্তেজনা আর রেকর্ড ভাঙা মুহূর্তে ভরপুর ছিল এই ঐতিহাসিক জয়।
ফিফার অফিসিয়াল টুর্নামেন্টে ইউরোপীয় কোনো ক্লাবকে হারিয়ে প্রথম জয় পেল এশিয়ার কোনো দল—এই কৃতিত্ব এখন আল হিলালের। পাশাপাশি, ইউরোপিয়ান দলের বিপক্ষে টানা ২০ ম্যাচ জয়শূন্য থাকার হতাশা থেকেও মুক্তি পেল এশিয়ান ক্লাব ফুটবল।
অরল্যান্ডোর ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে শুরুটা ছিল একেবারে সিটির নিয়ন্ত্রণে। ম্যাচের মাত্র ৯ মিনিটেই বের্নার্দো সিলভার গোলে এগিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার দল। বল দখল থেকে আক্রমণ—সব জায়গাতেই আধিপত্য ছিল তাদের। তবে আল হিলালের রক্ষণের বড় দেয়াল হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক ইয়েসিন বুনু। পুরো ম্যাচে ১০টি সেভ করে ম্যাচের নায়ক হয়ে ওঠেন তিনি।
প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রঙ বদলায় ম্যাচের। ৪৬ মিনিটে মার্কোস লিওনার্দোর গোলে সমতায় ফেরে আল হিলাল। এরপর ৫২ মিনিটে ম্যালকম গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। যদিও সিটির জবাব আসে তৎক্ষণাৎ—৫৫ মিনিটে হলান্ড গোল করে ম্যাচে ফেরান চ্যাম্পিয়নদের।
২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই আবারও এগিয়ে যায় আল হিলাল—৯৪ মিনিটে স্কোরশিটে নাম তোলেন কালিদু কুলিবালি। সিটিও হাল ছাড়েনি, ১০৪ মিনিটে ফোডেনের গোলে আবার সমতা। তবে শেষ হাসি হাসেন লিওনার্দো—১১২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন।
এই জয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে আল হিলাল। ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্স যেমন ইন্টার মিলানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল, এবার সেই পথেই হেঁটেছে সৌদির জায়ান্টরা।
আগামী শুক্রবার সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই অঘটনের নায়ক—আল হিলাল বনাম ফ্লুমিনেন্স। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষা করছে আরেকটি রোমাঞ্চকর রাত।