কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত পরিশোধন করে এবং অতিরিক্ত পানি ও বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। তবে কখনও কখনও এই কিডনিতে ইনফেকশন (সংক্রমণ) হতে পারে, যাকে চিকিৎসা ভাষায় পাইলোনেফ্রাইটিস (Pyelonephritis) বলা হয়। সঠিক সময়ে কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ শনাক্ত করতে না পারলে এটি জটিলতায় রূপ নিতে পারে।
এই আর্টিকেলে আপনি জানবেন কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ, কারণ, ঝুঁকি, প্রতিকার এবং ঘরোয়া করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত।
Table of Contents
কিডনি ইনফেকশনের সাধারণ লক্ষণসমূহ
নিচের টেবিলে কিডনি ইনফেকশনের প্রধান লক্ষণগুলো তালিকাভুক্ত করা হলো:
সিরিয়াল | লক্ষণের নাম | বিস্তারিত ব্যাখ্যা |
---|---|---|
১ | প্রস্রাবে জ্বালা | প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া অনুভূত হয় |
২ | ঘন ঘন প্রস্রাব | অল্প সময় পর পর প্রস্রাব পেতে থাকে |
৩ | পিঠে বা কোমরে ব্যথা | কিডনির সংক্রমণ হলে পিঠের এক বা দুই পাশে ব্যথা অনুভব হয় |
৪ | জ্বর ও কাঁপুনি | ইনফেকশন ছড়িয়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় |
৫ | প্রস্রাবে দুর্গন্ধ ও ঘোলা রঙ | প্রস্রাবের রঙ ঘন ও দুর্গন্ধযুক্ত হতে পারে |
৬ | বমি বা বমিভাব | সংক্রমণজনিত কারণে হজমে সমস্যা এবং বমি হতে পারে |
৭ | ক্লান্তি ও দুর্বলতা | শরীর দুর্বল লাগে, কাজে মন বসে না |
৮ | চোখের নিচে ফোলা বা মুখ ফোলা | কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে পানিশূন্যতা ও ফোলাভাব দেখা যায় |
কিডনি ইনফেকশনের সম্ভাব্য কারণ
কিডনি ইনফেকশনের (Kidney Infection) সম্ভাব্য কারণগুলো মূলত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ফলে ঘটে থাকে। এটি চিকিৎসা ভাষায় পাইলোনেফ্রাইটিস (Pyelonephritis) নামে পরিচিত। নিচে কিডনি ইনফেকশনের সম্ভাব্য কারণগুলো দেওয়া হলো:
- মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI):
সবচেয়ে সাধারণ কারণ। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ব্যাকটেরিয়া কিডনিতে পৌঁছে ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে। - মূত্র আটকে থাকা বা ঠিকমতো নিঃসরণ না হওয়া:
- প্রস্রাব আটকে রাখলে বা বারবার প্রস্রাব চেপে ধরলে।
- ইউরিন ফ্লো ঠিকমতো না হলে ব্যাকটেরিয়া কিডনিতে পৌঁছাতে পারে।
- মূত্রনালীর কাঠামোগত সমস্যা:
- জন্মগত ত্রুটি বা ইউরিনারি ট্র্যাক্টের কোনো গঠনগত ত্রুটির কারণে।
- মূত্রথলির রিফ্লাক্স (Vesicoureteral Reflux):
- যখন প্রস্রাব ইউরেটার হয়ে আবার কিডনির দিকে ফিরে যায় (বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে দেখা যায়)।
- ইনডোয়েলিং ক্যাথেটার বা দীর্ঘসময় ইউরিন ক্যাথেটার ব্যবহারের ফলে।
- ডায়াবেটিস:
- ডায়াবেটিক রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় তারা সহজেই ইনফেকশনে আক্রান্ত হতে পারেন।
- প্রস্রাবে পাথর (কিডনি স্টোন):
- পাথর প্রস্রাবের পথে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে ব্যাকটেরিয়া জমে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
- ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে:
- যেমন ক্যান্সার থেরাপি, এইডস, বা স্টেরয়েড থেরাপির কারণে।
- অপরিষ্কার যৌন অভ্যাস বা বারবার যৌনসম্পর্ক:
- বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
- গর্ভাবস্থা:
- হরমোনাল পরিবর্তন এবং প্রস্রাবের চাপের কারণে কিডনি ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে।
কারা কিডনি ইনফেকশনে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?
কিডনি ইনফেকশনের (Pyelonephritis) ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অন্যদের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। নিচে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের তালিকা দেওয়া হলো:
১. মহিলা (নারী):
- মহিলাদের ইউরেথ্রা (প্রস্রাবের রাস্তা) ছোট ও মলদ্বারের কাছে হওয়ায় ব্যাকটেরিয়া সহজে প্রবেশ করে।
- যৌনক্রিয়ায় সক্রিয় নারীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
- গর্ভবতী নারীদের হরমোন পরিবর্তন ও ইউরিনারি ট্র্যাক্টে চাপ পড়ায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
২. প্রবীণ (বয়স্ক) ব্যক্তিরা:
- বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
- প্রস্রাব ধরে রাখার প্রবণতা বা মূত্রথলি ঠিকভাবে খালি না হওয়া সাধারণ সমস্যা।
৩. যাদের ডায়াবেটিস আছে:
- ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে।
- প্রস্রাবে গ্লুকোজ থাকায় ব্যাকটেরিয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
৪. যাদের বারবার ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) হয়:
- যাদের ইউরিন ইনফেকশন হওয়ার ইতিহাস আছে, তারা ভবিষ্যতে কিডনি ইনফেকশনেও আক্রান্ত হতে পারেন।
৫. যাদের ইউরিনারি ট্র্যাক্টে বাঁধা বা রুদ্ধতা আছে:
- যেমন কিডনি স্টোন, প্রস্রাব আটকে থাকা, প্রোস্টেট বড় হওয়া (পুরুষদের ক্ষেত্রে), ইত্যাদি।
৬. ইমিউন সিস্টেম দুর্বল যাদের:
- যেমন এইডস রোগী, ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন রোগী, অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট প্রাপক ইত্যাদি।
৭. শিশুরা (বিশেষ করে যাদের জন্মগত ত্রুটি আছে):
- ইউরিন ফেরত যাওয়ার (Vesicoureteral Reflux) সমস্যা থাকলে।
৮. যারা দীর্ঘমেয়াদি ক্যাথেটার ব্যবহার করেন:
- যেমন হাসপাতালে ভর্তি রোগী বা অক্ষম ব্যক্তিরা।
৯. যাদের সম্প্রতি ইউরিনারি সার্জারি বা চিকিৎসা হয়েছে:
- সিস্টোস্কোপি বা ইউরিনারি ট্র্যাক্টে যেকোনো চিকিৎসাজনিত হস্তক্ষেপ।
এই ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মধ্যে কেউ থাকলে, সচেতনতা এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ খুব জরুরি। কিডনি ইনফেকশন উপেক্ষা করলে তা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা সেপ্টিসেমিয়া পর্যন্ত গড়াতে পারে।
চিকিৎসা ও করণীয়
কিডনি ইনফেকশন (Pyelonephritis) একটি গুরুতর ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, যা দ্রুত ও সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই নিচে এর চিকিৎসা ও করণীয় ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো:
চিকিৎসা (Treatment):
১. অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics):
- কিডনি ইনফেকশনের মূল চিকিৎসা হলো অ্যান্টিবায়োটিক।
- চিকিৎসক সাধারণত প্রস্রাব পরীক্ষা (urine culture) করে নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করেন।
- সাধারণত ৭–১৪ দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়।
- অ্যান্টিবায়োটিক শেষ হওয়ার আগেই ভালো লাগলে ওষুধ বন্ধ করা যাবে না।
সাধারণ ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক:
- Ciprofloxacin
- Levofloxacin
- Ceftriaxone (ইনজেকশন আকারে, জটিল ক্ষেত্রে)
- Amoxicillin-Clavulanate (Augmentin)
২. ব্যথা ও জ্বর কমানোর ওষুধ:
- Paracetamol বা Ibuprofen (ব্যথা বা জ্বর থাকলে)
৩. হাসপাতালে ভর্তি (গুরুতর ক্ষেত্রে):
- গর্ভবতী নারী, প্রবীণ, শিশুরা বা খুব দুর্বল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশনে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হতে পারে।
- প্রস্রাব বন্ধ, বমি, ডিহাইড্রেশন বা সেপসিস থাকলে জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।
করণীয় (What You Should Do):
১. প্রচুর পানি পান করুন:
- ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে ফেলতে দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
২. প্রস্রাব আটকে রাখবেন না:
- প্রস্রাব চাপলে দ্রুত করুন, চেপে রাখলে ইনফেকশন বাড়তে পারে।
৩. বিশ্রাম নিন:
- শরীর দুর্বল হয়ে পড়লে পর্যাপ্ত বিশ্রাম জরুরি।
৪. পরিপূর্ণ ওষুধের কোর্স সম্পন্ন করুন:
- ওষুধ সঠিক নিয়মে এবং সময়মতো খেতে হবে, মাঝপথে বন্ধ করা যাবে না।
৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন:
- প্রস্রাব করার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নিন।
- মহিলারা প্রস্রাবের পর সামনের দিক থেকে পিছনের দিকে পরিষ্কার করবেন (front to back)।
যা করবেন না:
- নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া
- অর্ধেক কোর্সে ওষুধ বন্ধ করা
- প্রস্রাব চেপে রাখা
- পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া
পরবর্তী পরীক্ষা:
- চিকিৎসা শেষে ইউরিন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া দরকার যে সংক্রমণ পুরোপুরি সেরে গেছে।
কবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন:
- জ্বর কমছে না
- পেছনে বা কোমরে তীব্র ব্যথা
- বমি বা খাবারে অরুচি
- প্রস্রাবে পুঁজ বা রক্ত
- মাথা ঝিমঝিম বা দুর্বল লাগা
ঘরোয়া কিছু উপায় (চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি):
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি, কিডনি ইনফেকশনের সময় কিছু ঘরোয়া উপায় ও অভ্যাস রোগ উপশমে সহায়ক হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে — এই ঘরোয়া উপায়গুলো চিকিৎসার বিকল্প নয়, বরং পরিপূরক।
কিডনি ইনফেকশনের ঘরোয়া কিছু সহায়ক উপায়:
১. প্রচুর পানি পান করুন:
- দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
- পানি ব্যাকটেরিয়াকে ধুয়ে মূত্রের মাধ্যমে বের করতে সাহায্য করে।
২. ক্র্যানবেরি জুস (Cranberry Juice):
- ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক।
- এটি ব্যাকটেরিয়ার মূত্রনালীতে আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
🔸 বিঃদ্র: বাজারে পাওয়া মিষ্টি ক্র্যানবেরি জুস নয়, unsweetened বা চিনি ছাড়া জুস গ্রহণ করুন।
৩. রসুন (Garlic):
- প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক।
- প্রতিদিন সকালে ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়া যেতে পারে (খালি পেটে নয়, খাবারের পর)।
৪. তুলসী পাতার রস:
- অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও প্রদাহনাশক (anti-inflammatory)।
- সকালে এক চামচ তুলসী পাতার রস খালি পেটে খাওয়া যেতে পারে।
৫. হালকা গরম পানিতে লেবু ও মধু:
- মূত্র পরিষ্কার রাখতে ও শরীর ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক।
৬. নুন কম খাওয়া:
- অতিরিক্ত লবণ কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
- ইনফেকশনকালীন সময় লবণাক্ত খাবার ও প্রসেসড ফুড কমিয়ে দিন।
৭. আদা ও হলুদ চা:
- প্রদাহ হ্রাস করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- অল্প আদা ও হলুদ মিশিয়ে দিনে ১–২ কাপ পান করা যেতে পারে।
যা এড়িয়ে চলবেন:
- মসলাযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার
- ঠান্ডা পানীয় ও কার্বনেটেড ড্রিংকস
- চা-কফি অতিরিক্ত পান
- ধূমপান ও অ্যালকোহল
অতিরিক্ত পরামর্শ:
- ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
- প্রস্রাব আটকে রাখবেন না
- যৌনমিলনের পর প্রস্রাব করুন (বিশেষ করে নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ)
- পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক বিশ্রাম নিন
প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে কী করবেন?
কিডনি ইনফেকশনের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সাড়া দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেরি করলে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
নিচে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে কী করবেন — সেটি ধাপে ধাপে পরিষ্কারভাবে দেওয়া হলো:
কিডনি ইনফেকশনের প্রাথমিক লক্ষণ:
- প্রস্রাব করতে জ্বালা বা পোড়ানো অনুভব
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ
- প্রস্রাবে দুর্গন্ধ
- প্রস্রাব ঘোলা বা রক্ত মিশ্রিত
- পেছনে (কোমরের নিচে) ব্যথা
- জ্বর ও কাঁপুনি
- দুর্বল লাগা বা মাথা ভার
- বমি বমি ভাব
কী করবেন (প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে):
১. ডাক্তার দেখান (প্রথম ও প্রধান কাজ):
- ইউরিন পরীক্ষা (urine test), ইউরিন কালচার, রক্ত পরীক্ষা ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে।
- প্রাথমিক লক্ষণকে হালকা মনে করা যাবে না — দ্রুত চিকিৎসা জরুরি।
২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
- দিনে ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন (যদি চিকিৎসক পানির সীমা না দেন)।
- এতে প্রস্রাবের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে বের হতে সাহায্য হয়।
৩. প্রস্রাব আটকে রাখবেন না:
- যত দ্রুত সম্ভব প্রস্রাব করুন, চেপে রাখলে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।
৪. নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না:
- ভুল ওষুধ সংক্রমণ আরও জটিল করতে পারে।
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ নয়।
৫. গরম পানি দিয়ে সেঁক দেওয়া (কোমরের ব্যথায়):
- কোমরে হালকা ব্যথা থাকলে গরম পানির থলেতে সেঁক দিতে পারেন।
৬. বিশ্রাম নিন:
- শরীর দুর্বল হলে বিশ্রাম নিতে হবে, যাতে শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।
৭. মিষ্টি ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন:
- সুষম, হালকা ও কম লবণযুক্ত খাবার খান।
প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসা নিন। দ্রুত ব্যবস্থা নিলে ইনফেকশন সহজে সেরে যায়, তবে অবহেলা করলে তা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, সেপ্টিসেমিয়া (রক্তে সংক্রমণ) বা স্থায়ী কিডনি ক্ষতি পর্যন্ত গড়াতে পারে।
প্রশ্নোত্তর (FAQ)
প্রশ্ন ১: কিডনি ইনফেকশন কি বিপজ্জনক?
উত্তর: হ্যাঁ। সঠিক চিকিৎসা না হলে এটি কিডনি ফেইলিওরের দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে দ্রুত শনাক্ত করলে নিরাময় সম্ভব।
প্রশ্ন ২: কীভাবে বুঝবো কিডনির ইনফেকশন হয়েছে?
উত্তর: প্রস্রাবে জ্বালা, পিঠে ব্যথা, জ্বর, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ বা ঘন রঙ হলে আপনি কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণে ভুগছেন কি না, তা যাচাই করা প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৩: ইনফেকশন হলে কি বাড়িতে চিকিৎসা করা যায়?
উত্তর: প্রাথমিক অবস্থায় ঘরোয়া কিছু উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে, তবে সঠিক চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
প্রশ্ন ৪: কতদিনে ভালো হয়?
উত্তর: ইনফেকশনের ধরন ও চিকিৎসা অনুযায়ী সময় ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স ৭-১৪ দিন লাগে।
উপসংহার
কিডনি ইনফেকশন সাধারণত খুব গুরুতর সমস্যা না হলেও অবহেলা করলে তা মারাত্মক হতে পারে। তাই এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনে রাখা এবং দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।