বিটিএস বনাম নতুন কে–পপ গ্রুপ: পরিবর্তনের হাওয়ায় কোথায় দাঁড়িয়ে বিটিএস?

কে-পপ জগতে পরিবর্তনের হাওয়া, তবে কি শেষ বিটিএসের আধিপত্য?

বিশ্বসংগীতে একসময় কেবল একটি নামই রাজত্ব করেছে—বিটিএস (BTS)। বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় ‘পারমিশন টু ড্যান্স’ গানটি সারা দুনিয়ায় হয়ে উঠেছিল আশার প্রতীক। তবে সময় বদলেছে। কে-পপ দুনিয়ায় এখন নতুনদের ঝড়।

বিটিএস এখনো জনপ্রিয়, তবু প্রশ্ন থেকেই যায়

৮ জুন প্রকাশিত স্পটিফাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিটিএসের নতুন মাসিক শ্রোতার সংখ্যা বেড়েছে ৫১,১৭৬ জন। এ সংখ্যাই প্রমাণ করে, তাদের জনপ্রিয়তা এখনো আছে। কিন্তু সেই একচ্ছত্র আধিপত্য কি আগের মতো আছে?

নতুন গ্রুপের উত্থান

কে-পপ জগতে এখন আলোচনার কেন্দ্রে সেভেনটিন, স্ট্রে কিডস, নিউজিনস, লে সেরাফিম, আইভ, জিরোবেজওয়ান, বয়নেক্সটডোর, বেবিমন্সটার, আইলিটরাইজ। নতুন প্রজন্মের এই গ্রুপগুলো নিজস্ব ধারা তৈরি করেছে, যা কে-পপকে করেছে আরও বৈচিত্র্যময়।

দীর্ঘ বিরতির প্রভাব

বিটিএস সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ ও ব্যক্তিগত একক ক্যারিয়ারের কারণে অনেক দিন তারা ব্যান্ড হিসেবে সক্রিয় ছিলেন না। সাম্প্রতিক সময়ে আরএম, জাংকুক, জিমিন ও ভি প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরেছেন। বাকিরাও ফিরছেন। তবু এই দীর্ঘ বিরতি অনেক পুরোনো ভক্তের আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। অনেকে এর মধ্যেই অন্য গ্রুপের ভক্ত হয়ে গেছেন।

ভক্তদের মধ্যেই বিভক্তি

এক সময় ‘ওটি৭’, অর্থাৎ বিটিএসের সাত সদস্যকে একসঙ্গে ভালোবাসার কালচার ছিল ভক্তদের মধ্যে। কিন্তু এখন অনেকেই নির্দিষ্ট সদস্যের একক ক্যারিয়ারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে হাইব করপোরেশনকে ঘিরে নানা বিতর্কও ভক্তদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ইস্যুতে চুপ থাকা বা পক্ষ নেওয়া—এসব নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।

সেভেনটিনের উত্থান, বিটিএসের তুলনা

২০২৪ সালে ‘দ্য হলিউড রিপোর্টার’ জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কে-পপ গ্রুপ এখন সেভেনটিন। তাদের এশিয়া সফরের আয় ৯৮.৪ মিলিয়ন ডলার। নতুন অ্যালবাম ‘হ্যাপি বার্থডে’ প্রথম দিনেই বিক্রি হয়েছে ২২ লাখ কপি। যদিও সেই সময় বিটিএস সক্রিয় ছিল না, তবু এই সাফল্য বারবার বিটিএসের সঙ্গে তুলনায় এসেছে।

নিউজিনস সংকট ও হাইব বিতর্ক

নিউজিনসের প্রতিষ্ঠাতা মিন হি জিন ও হাইব করপোরেশনের দ্বন্দ্ব কে-পপ দুনিয়ায় বড় আলোড়ন তোলে। এর প্রভাবে নিউজিনস কার্যত এখন বিরতিতে। অনেকেই এই গ্রুপকে ‘নারী বিটিএস’ বলে মনে করতেন। এই বিভেদেও বিটিএস–ভক্তরা ভাগ হয়ে গেছেন।

শেষ কথা

বিটিএস এখনো একটি বৈশ্বিক নাম। কিন্তু কে-পপ জগতে তাদের জায়গা আগের মতো অটুট থাকবে কি না, সেটা এখন সময়ই বলে দেবে। নতুন প্রজন্মের উত্থান, রাজনৈতিক মতাদর্শ, একক ক্যারিয়ারের প্রতিযোগিতা—সব মিলিয়ে ‘আর্মি’দের আবেগ ও আগ্রহে ভাটা পড়েছে। এখন প্রয়োজন আরও শক্তভাবে ফিরে আসা, যাতে প্রমাণ হয়—বিটিএসের গল্প এখনো শেষ হয়নি।

Leave a Comment