গরমের সময় অনেকে আরামের জন্য কিংবা স্টাইলের কারণে মোজা ছাড়া জুতা পরতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেড়েছে। স্নিকার্স, লোফার কিংবা বিভিন্ন ধরনের জুতা অনেকে এখন সরাসরি পায়ে পরে নেন, মোজা না পরেই। দেখতে যতটা স্টাইলিশ বা আরামদায়ক মনে হয়, বাস্তবে এটি স্বাস্থ্য, বিশেষ করে পায়ের জন্য বেশ বিপজ্জনক হতে পারে।
পায়ে আমাদের অনেক ঘামগ্রন্থি থাকে, তাই প্রতিদিন পা ঘামে। মোজা সেই ঘাম শোষণ করে পা শুকনো রাখে। কিন্তু মোজা ছাড়া জুতা পরলে ঘাম জমে জুতার ভেতরটা ভিজে যায়, যা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মানোর জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। এতে পায়ে দুর্গন্ধ হওয়া খুব স্বাভাবিক। শুধু দুর্গন্ধই নয়, এই আদ্র পরিবেশে ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ‘অ্যাথলেটস ফুট’–এর ঝুঁকিও বেড়ে যায়। পায়ে চুলকানি, চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়া বা ফাটার মতো সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এই ধরনের সংক্রমণ আরও মারাত্মক হতে পারে, কারণ তাঁদের পায়ের ক্ষত সহজে শুকায় না এবং সংক্রমণ জটিল রূপ নিতে পারে।
মোজা ছাড়া জুতা পরলে আরও একটি বড় সমস্যা হচ্ছে ফোসকা পড়া। কারণ, পা তখন সরাসরি জুতার সঙ্গে ঘর্ষণে আসে। ফলে অনেকক্ষণ হাঁটলে পায়ের চামড়ায় ক্ষতও হতে পারে। শক্ত বা নতুন জুতা হলে সমস্যা আরও বাড়ে। অন্যদিকে, পায়ের ঘাম ও তেল সরাসরি জুতার ভেতরের অংশে লেগে জুতার ইনসোল ও আস্তরণ নষ্ট করে দেয়, ফলে জুতা দ্রুত পুরনো ও অকার্যকর হয়ে পড়ে।
আরেকটি বড় অসুবিধা হচ্ছে চলাফেরার সময় অস্বস্তি হওয়া। মোজা পায়ের জন্য সুরক্ষার কাজ করে। তা ছাড়া, চাপ বা আঘাত থেকে পা রক্ষা পায়। কিন্তু যখন মোজা ছাড়া জুতা পরা হয়, তখন হাঁটতে গিয়ে পা ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব হতে পারে।
অতএব, যতই স্টাইলিশ বা আরামদায়ক মনে হোক না কেন, মোজা ছাড়া নিয়মিত জুতা পরা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। যারা নিয়মিত বাইরে থাকেন বা বেশি হাঁটাচলা করেন, তাঁদের অবশ্যই পরিষ্কার ও শুকনো মোজা পরে জুতা ব্যবহার করা উচিত। এতে পা সুস্থ থাকবে, জুতা টিকবে, আর আপনি থাকবেন নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত।