মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস: ভ্যান্স

মার্কিন বিমান হামলার ফলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা হারিয়েছে—এমনটাই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা ধ্বংস হয়েছে কি না, তা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—ইরানকে শক্ত বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান যেকোনো সময় তাদের ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে।

গত রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ইসরায়েলের চলমান অভিযানে যুক্ত হয়ে এই হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ১৩ জুন থেকে ইরানের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করাই তাদের মূল লক্ষ্য।

ইসরায়েল বরাবরই দাবি করে আসছে, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তাহলে তা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ফলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে আসছে।

ইরানের প্রতিরোধের অংশ হিসেবে কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার একটি, যা মধ্যপ্রাচ্যে বহু অপারেশনের নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ না হওয়ার জন্য কূটনৈতিক আহ্বানও আসছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি ভোর ৪টার পর আর কোনো হামলা না চালায়, তাহলে ইরানও প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ইসরায়েল যদি অবিলম্বে তাদের ‘অবৈধ আগ্রাসন’ বন্ধ করে, তাহলে ইরানের পক্ষ থেকেও নতুন করে হামলার কোনো ইচ্ছা নেই।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সূত্র: Al Jazeera

Leave a Comment